রেজাউল করিম রেজা, পেকুয়া
কক্সবাজারের পেকুয়ায় মগনামার মরিচ্যাদিয়া এলাকায় এক প্রতিবন্ধী শিশু সন্তানসহ দুই এতিমের পৈত্রিক সম্পত্তি ৮৪শতক লবণ মাঠ অবৈধভাবে দখলে নিতে সৎ মায়ের বিরুদ্ধে দলিল জালিয়াতির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে সম্প্রতি জমির আধিপত্য নিতে দুপক্ষের মধ্যে একাধিকবার ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। সৎ মায়ের ভাড়াটে দুর্বৃত্তরা ভয়ভীতি দেখিয়ে জমি জবর দখলের খবর পাওয়া গেছে।জমি নিয়ে আদালতে উভয় পক্ষের মামলা চলমান আছে। পেকুয়া থানা পুলিশ কয়েক দফা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। স্থিতি অবস্থা পৈত্রিক সম্পত্তির দখল বজায় রাখতে মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া দুই কনে সন্তানকে আইনি সহায়তা দিচ্ছিলেন। তবে পুলিশ ও আইনের তোয়াক্কা না করে একটি প্রভাবশালী চক্র লবণ মাঠ জবর দখলে নিয়েছে।স্থানীয়সুত্রে জানাগেছে, মরিচ্যাদিয়ায় প্রায় ৮৪ শতক নিয়ে মৃত নজরুল ইসলামের দ্বিতীয় স্ত্রী কাউসার জাহান নাজনীন ও নজরুল ইসলামের প্রথম স্ত্রীর মেয়ে মাশুরা ইসলাম গংদের মধ্যে চলছিল।
মগনামা মৌজার বিএস ৮৬২, রেকর্ড়ীয় মালিক মৃত হেফাজুতুর রহমান চৌধুরী। দুছেলে, দুমেয়ে,স্ত্রীসহ পাঁচ ওয়ারিশগন তিন একর জমির মালিক মরিচ্যাদিয়ায়।প্রতি ছেলে দিয়ারা ১৩১১ নং খতিয়ান ও দেয়ারা ৮৪২৬, ৮৪২৭, ৮৪২৯, ৮৪৩০সহ মোট ১০টি দাগের আন্দরে ৮৪ শতক জমি প্রাপ্ত হন। এদিকে ২০২৩ সালের দিকে মৃত হেফাজুতুর রহমানের ছেলে নজরুল ইসলাম মারা যান। তার দ্বিতীয় স্ত্রী কাউসার জান্নাত নাজনীন সম্প্রতি হেবা মুলে একটি দলিল উপস্থাপন করেন। ওই দলিলে নজরুল দ্বিতীয় স্ত্রীকে ৮৪ শতক জমি হেবা মুলে রেজিস্ট্রি দেন। নজরুলের প্রথম স্ত্রী মারা যান। প্রথম স্ত্রীর সংসারে মাশুরা ইসলাম ও জান্নাতুল মাওয়া নামে দুই মেয়ে রয়েছে। মেয়েদের মধ্যে জান্নাতুল মাওয়া শারীরিক ও বাক প্রতিবন্ধী। অপরদিকে ওই রেজিস্ট্রির বৈধতা নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা ধরনের প্রশ্ন। নজরুল শিক্ষিত ছিলেন। হেবা দলিলে তার স্বাক্ষর নেই। আছে টিপসই। নাজনীনকে ২০২২ সালের দিকে বিয়ে করেন। তবে ওই নারী নিঃসন্তান। থাকেন কক্সবাজার শহরে।এব্যাপারে নজরুল ইসলামের ছোট ভাই তৌহিদুল ইসলাম মানিক বলেন, দলিলটি ভুঁয়া। সেটি জালিয়াতি করা হয়েছে। টিপসই থাকবে কেন?। আমার ভাই শিক্ষিত। সম্পত্তি পাবেন এ খতিয়ানে ৮৪ শতক। জীবিত থাকা অবস্থায় বড় ভাই ৪০ শতক জমি বিক্রি করেছে। বিক্রির পর থাকবে ৪৪ শতক। কিন্তু নাজনীনকে দেওয়া দলিলে দেখা যাচ্ছে ৮৪ শতক। জাল দলিল নিয়ে নাজনীন জমিতে ভাড়াটে লোক পাঠিয়েছে। আমিরুল কবির, আব্দু ছালাম, হোসেনসহ ভাড়াটে লোকজন এখন আমার ভোগ দখলীয় জমিও জবর দখলে নিয়েছে। প্রতিবাদ করায় এখন আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে।
তৌহিদুল ইসলাম মানিকের স্ত্রী শাহিন আক্তার বলেন, সেদিন তারা মাঠে আমার স্বামীর ওপর হামলা করেছে। রাস্তায় বের হতে পারছেনা। বাড়িতে এসেও হুমকি দিচ্ছে।
মানিকের মা মাবিয়া বেগম বলেন, আমার দুই এতিম নাতনীকে জমি থেকে উচ্ছেদ করেছে। আমার ছেলে জমি রেজিস্ট্রি দেয়নি। আল্লাহ এসবের বিচার করবে। তারা শুক্রবার রারে আমার চাষা গিয়াস উদ্দিনকে মারধর করেছে।নজরুল ইসলামের মেয়ে মাশুরা ইসলাম বলেন, আমরা দুটি মামলা করেছি। ভুমি অপরাধ ও প্রতিরোধ আইন ও দলিল বাতিলে এ মামলাগুলি করেছি।এ ব্যাপারে কাউসার জাহান নাজনীন বলেন, এ জমি স্বামী জীবিত থাকতে হেবা মুলে রেজিস্ট্রি দিয়েছে। আমিরুল কবিরকে আমি জমি দেখভাল করতে দায়িত্ব দিয়েছি।পেকুয়া থানার এসআই আবদুল জলিল বলেন, আমি সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। উভয় পক্ষকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বলেছি।
পাঠকের মতামত